-->

আপনার মোবাইল সিমটি ফোরজি কিনা যেভাবে চেক করবেন


 ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে বাংলাদেশে চতুর্থ প্রজন্মের ইন্টারনেট সেবা ফোর-জি চালু করতে যাচ্ছে মোবাইল অপারেটররা। এ নিয়ে মানুষের, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে আগ্রহ লক্ষ করা যাচ্ছে।

 
এদিকে মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো প্রায় একবছর আগে থেকে ফোরজি সিম বিক্রি শুরু করেছে। এছাড়া, এসময়ের মধ্যে যারা সিম রিপ্লেস (নষ্ট, চুরি বা হারিয়ে গেলে নতুন সিম কিনে প্রতিস্থাপন) করেছেন, তারাও অপারেটরের কাছ থেকে পেয়েছেন ফোরজি সিম।

কিন্তু আগে যারা সিম কিনেছেন, তারা যেভাবে জানবেন আপনার মোবাইল সিমটি ফোরজি নাকি আগের অবস্থায় রয়ে গেছে-

আপনার সিমটি ফোরজি কিনা, তা যাচাইয়ের জন্য মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো মেসেজ অপশন চালু করেছে। সংশ্লিষ্ট অপারেটরে এসএমএস পাঠিয়ে জেনে নেওয়া যাচ্ছে, সিমটি ফোরজি কিনা। কোনও কোনও এসএমএস-এ  ফোরজি সিম সংক্রান্ত তথ্যের পাশাপাশি ফোন সেটটিও ফোরজি সমর্থন করে কিনা, তা জানা যাবে।

এরই মধ্যে অপারেটরগুলো মোবাইলে ফোরজি সেবা পেতে আগ্রহীদের গ্রাহকসেবা কেন্দ্রে গিয়ে সিম বদলে নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে।

মোবাইল ফোন আমদানিকারকদের সূত্রে জানা গেছে, বাজারে এখন ১০ হাজার টাকার ওপরে যেসব স্মার্টফোন পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলো ফোরজি সমর্থন করে।


গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মোবাইলের কিপ্যাড অথবা ডায়াল অপশনে গিয়ে *১২১*৩২৩২# লিখে ডায়াল বাটন চাপলে ফিরতি মেসেজে জানা যাবে, আপনার সিমটি ফোরজি কিনা। কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, যারা সিম বদল করেত চান— তারা ১১০ টাকার বিনিময়ে ফোরজি সিম নিতে পারবেন। তবে ‘জিপি স্টার’ গ্রাহকরা বিনা খরচে সিম বদলে নিতে পারবেন।

বাংলালিংক কর্তৃপক্ষ জানায়, বাংলালিংকের সিম বদলে নিতে গ্রাহককে কোনও খরচ দিতে হবে না। বিনামূল্যে অপারেটরটি গ্রাহকদের সিম বদলে ফোরজি সিম দিচ্ছে। কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, গ্রাহকরা মেসেজ অপশনে গিয়ে ফোরজি লিখে ৫০০০ নম্বরে এসএমএস পাঠালে ফিরতি মেসেজে জানিয়ে দেওয়া হবে, সিমটি ফোরজি কিনা।

রবি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে,  গ্রাহক তার মোবাইলের কিপ্যাড অথবা ডায়াল অপশনে গিয়ে *১২৩*৪৪# লিখে ডায়াল বাটন চাপলে ফিরতি এসএমএস-এ জানিয়ে দেওয়া হয়, সিম ও সেটটি ফোরজি কিনা। এয়ারটেল গ্রাহকরাও একইভাবে জানতে পারবেন সিম ও সেটের তথ্য। তবে সিম বদলে ফোরজি সিম নিতে গ্রাহকের খরচ হবে ১০০ টাকা। রবি কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে অপারেটরটি বাজারে রবি সিম ছেড়েছে। এসময়ের মধ্যে যারা সিম কিনেছেন বা বদল করেছেন, তাদের সিম ফোরজি সমর্থিত।

টেলিটক সূত্রে জানা গেছে, অপারেটরটির গ্রাহকরা যত সিম ব্যবহার করছে এবং বাজারে অবিক্রিত রয়েছে ৯০ ভাগই ফোরজি সিম। অবশ্য ১০ ভাগ গ্রাহকের সিম বিনা খরচে ,নাকি টাকা দিয়ে বদলে নিতে হবে, সে বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানা গেছে।

অপারেটর সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ফোন সেট ফোরজি সমর্থিত কিনা তা জানতে গ্রাহকরা সংশ্লিষ্ট অপারেটরের সেবাকেন্দ্রে গিয়ে জেনে নিতে পারবেন সেটের তথ্য।

মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো বলছে, এই সেবা শুরুর মানে হল ‘ইন্টারনেট এক্সপ্রেসওয়েতে’ উঠে যাওয়া। ধীর গতির ভোগান্তি থেকে মুক্তি পেয়ে ইন্টারনেটে গ্রাহকরা ছুটবেন চওড়া রাস্তায়।

উচ্চ গতির কারণে ইন্টারনেট ব্যবহারে সময় বাঁচবে, ইন্টারনেটভিত্তিক সেবাগুলো পাওয়া যাবে বাধাহীনভাবে। প্রচলিত অনেক সেবাই হয়ে যাবে ইন্টারনেটভিত্তিক।

তবে মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখা না হলে ফোর জি চালুর কোনো সফলতাই আসবে না বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে অনেকেরই জিজ্ঞাসা, কী থাকবে ফোর জিতে

১. থ্রিজি সুবিধায় ইন্টারনেট ডাউনলোড বা আপলোডে যে সময় লাগত, ফোর জিতে সে সময় নেমে আসবে প্রায় অর্ধেকে।

২. প্রযুক্তি নিরপেক্ষতার কারণে যে কোনো ব্র্যান্ডেই অপারেটররা ফোর জি সেবা দিতে পারবে। প্রযুক্তি নিরপেক্ষতা তরঙ্গের কার্যক্ষমতা দেড় থেকে দুই গুণ বাড়িয়ে দেয়। এতে শুধু ইন্টারনেটই নয়, ভয়েসকলেও অগ্রগতি হবে।

৩. ফোর জি সেবা ব্যবহারের বড় চ্যালেঞ্জ হবে এটি ব্যবহারের উপযোগী হ্যান্ডসেট। দেশে ৩০% মানুষের হাতে স্মার্টফোন রয়েছে, যার মধ্যে ১০% থ্র্রি-জি ব্যবহারের উপযোগী। ফোর জি হ্যান্ডসেটের চাহিদা তৈরিতে সরকারের সহায়তার প্রয়োজন পড়বে।

৪. ফোর জি গতি পেলে প্রান্তিক মানুষ নানা কাজ করতে পারবে, ফলে তাদের শহরমুখী হতে হবে না। অনলাইনভিত্তিক সেবা বেড়ে যাবে এবং ই-কর্মাসের প্রসার ঘটবে।

৫. ফোর জি চালু হলে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকেও আউটসোর্সিংয়ের কাজ করার সুযোগ তৈরি হবে; বাড়বে কাজের ক্ষেত্র।

৬. ফোর জি গতিতে দেশে এফ কমার্সভিত্তিক ২০ হাজার পেইজ  বা গ্রুপের প্রসার আরও বাড়বে।
আরও নতুন পোষ্ট পরবর্তী পোষ্ট

Related Posts

Facebook